কলমের নিব

জানো, আমার সব কবিতা
কেবলই তোমায় নিয়ে?
আমার অশ্রুর কোনো শব্দ নেই
সে ঝরে অক্ষর হয়ে!
পাজরের ভেতর আমার অনুভূতি
ছোটে অ আ ক খ হয়ে!
আর আমার প্রেম?
ঐ কলমের নিব পর্যন্তই!

লাল

যদি পৃথিবীতে লাল রং ছাড়া
আর কোনো রং না থাকতো!
কার কোন রং প্রিয়?
এ নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব নাহি লাগত!

নীল বেগুনি হলুদ রঙের জন্যে
সমাজে বিদ্বেষ নাহি থাকত!
সামান্য এক রঙের জন্যে
আজ মনুষ্যের রক্ত নাহি ঝড়ত!

তোমায় নিয়ে ভাবতে ভীষণ ভালো লাগে

তোমার আমার ওষ্ঠ যখন মিলিমিটার দুরত্বে,
ওপাশটা শূন্যতা গ্রাস করে নিল।
তোমার কপোল ছোঁবার জন্য হাত বাড়াতেই
কেবলই বাতাসের স্পর্শ মিলল।
ঝড়ো বাতাসে তোমার কেশ এলোমেলো,
স্পর্শ করবার আস্পর্ধা নাহি হোলো।

ঈশ্বর কি মরা?

যুবতীর গলে যাওয়া নগ্ন দেহ
এখনো ঘাসের উপর উবু হয়ে পড়ে,
ঈশ্বর কি কিছুই দেখলো না, এতটাই অন্ধ?

স্যুটকেস নিয়ে বাড়ির পথে ফেরা
খান সাহেব এখন নিথর, স্যুটকেসও নেই!
ঈশ্বর চুপ! তিনিও কি ওই টাকার ভাগীদার?

নোটের বিনিময়ে অন্যায় এখন ন্যায়,
পাপী মুক্ত! আর সাধু এখন জেলে!
ঈশ্বর বোধ হয় ঘুষের ঠিকমতোই ভাগ পেয়েছেন?

আঁধারে খুবলে নিয়েছে কুকুরের চোখ,
জানোয়ারদের চোখ এখনও কি করে কোটরে?
অবলা, বোবা বলে কি ঈশ্বরের কাছে মূল্যহীন?

হতাশায় পাহাড়ের কিনার থেকে লাফালো,
ভালো দিনের আশায় থামাতে পারলো না?
ঈশ্বর কি চার পেয়ো প্রানীর মতোই বোবা?

নাকি সবকিছুই লেখা আছে ঈশ্বরের ডায়েরিতে?

আমি তো কেবল তোমাকে ভালোবেসেছিলেম

হয়তো কানুর বংশীর সুর তোমায় টানে,
হয়তোবা apollo-র কাব্য,
তবু আমি তোমাকে কাছে চাই।

হয়তো তুমি যীশুর মহত্বে বিশ্বাসী,
হয়তোবা মুহম্মদের বিচক্ষণতায়,
তবুও তোমার আরও গভীরে যেতে চাই।

হয়তো বুদ্ধের উদারতায় তুমি বিস্মিত,
হয়তোবা Ptah-র নৈপুণ্যে,

ধম্ম?
আমি তো কেবল
আর কেবলই তোমাকে ভালোবেসেছিলেম!!

দেবী

আন্দাজে হাতড়াচ্ছিলেম আলম্বের তরে
– ঘন কালো আন্ধারে।
হঠাৎ দেবী বাড়াইলেন পাণি
– শক্তি দিলো আপনারে।

যখনই হারাই পথ, নিমজ্জিত দেবীর পুজে;
কেহ নাই যার, সে কেবল ঈশ্বরেরেই খুঁজে।

ভ্রান্তি

তুমি যখন শান্তি খোঁজো-
হৃৎপিন্ডের মাঝে;
হৃৎপিন্ডগুলোর মাঝে;
আমি তখন চেয়ে চেয়ে
তোমায় বিদ্রুপ করি।

তুমি যখন বিশরাম নিতে চাও-
সবুজের মাঝে;
একাকীত্বের মাঝে;
আমি তখনও তোমায় বিদ্রুপ করি
তবে নীরবে।

শান্তি কি বিশরাম!
সে তো ভূতলে;
গন্ধসারের অনলে;
কিংবা চিংহাইয়ের
শকুনের পাকস্থলে।

কৃষ্ণচূড়া

আমার পাড়ায় একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে,
ও গাছের একটা ফুলের সাথে খুব কথা হয়,
বারবার ভাবি ছিড়ব ঐ ফুল,
ফুলদানিতে রাখব সাজায়।

প্রতিদিন ভাবি ওই ফুল বাড়ি আনব,
ছিড়ব ভাবি, তবুও ছেঁড়া হয়ে ওঠে না।
মাঝে মাঝে নিজ প্রলোভন দমাতে
তারে দেখেও আমি দেখি না।

ঐ কৃষ্ণচূড়া বাসা বেঁধেছে,
বাসা বেঁধেছে আমার মগজে।
আমার মগজ ঝাঁজরা, সে মুক্তি চায়,
কেবল ঈশ্বরই জানেন, এর নিস্তার কোথায়!

আড়াল

আমি অন্ধকারে মেলাব,
যাতে কেউ না দেখে আমায়!
আমি দেখতে কেমন, সুশ্রী না কুশ্রী?
তাতে কার কি আসে যায়?

আমি বধির হয়ে যাব,
কিংবা হারাব নির্জনে!
যাতে ঐ জানোয়ারদের কটু কথা,
না পৌঁছে আমার কানে!

যতই আড়াল হই, বধির হই,
তাতে কি আদৌ আসবে পরিবর্তন!
নাকি অন্ধকারেও হায়নাদের চোখে,
কেবলই পাছা আর স্তন!

তুমি মানুষ

তুমি মানুষ,
তোমার আবার ধর্ম কিসের!
তোমারে বানাইছে স্রষ্টায়,
দেহে ধর্মের চিহ্ন কোথায়!
তুমি মুসলমান, তাই খুন রাঙা,
খ্রিস্টান হইলে ফ্যাকাসে!
ধর্ম লই মানব কোন্দল দেখি,
স্বরগে বসি ইশ্বরে হাসে!

তুমি মানুষ,
তোমার আবার কিসের নথি!
স্রষ্টায় তোমারে মগজ দিছে,
দিছে হৃদয়!
আবেগও দিছে, বিবেকও দিছে,
সিদ্ধান্ত নয়!